আওয়ামী লীগের তিনি কেউ নন, আবার তিনি মিশে আছেন আওয়ামী লীগেই। আওয়ামী লীগ মিশে আছে তাঁর রক্তে। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি একাই দাঁড়িয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে, কারাবন্দী শেখ হাসিনার সুচিকিৎসার জন্য। তিনি প্রথম আভিযোগ করেছিলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেন সরকার শেখ হাসিনাকে বিনা চিকিৎসকায় হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।’ ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের পর, তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ বিষয়ে উপদেষ্টা করা হয়েছিল। এখন তিনি সরকারে নেই, কিন্তু রাজনীতির প্রতিটি ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করছেন গভীর ভাবে। অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত রায় নিয়ে যখন দেশে অস্থিরতা তখন বাংলা ইনসাইডার তাঁর মুখোমুখি হয়।
বাংলা ইনসাইডারকে সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেছেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত রায় ছিল, আরেকটা ওয়ান-ইলেভেন ঘটানোর ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনার দৃঢ়তা এবং বিচক্ষণতায় এই ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় অবস্থানের কারণে এখন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার দুরভিসন্ধি জনসমক্ষে চলে এসেছে। এখন অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ করাই উচিত।’
সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, ‘ ষোড়শ সংশোধনীর রায় সংসদ, সংসদ সদস্য সম্পর্কে মন্তব্য গুলো পরিকল্পিত, দুরভিসন্ধিমূলক এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই রায়ের উদ্দেশ্য ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা ছিল না। এই রায় গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির ওপর কালিমা লেপনের এক চক্রান্ত।’ তাঁর মতে, ‘এসব মন্তব্য করে আবার একটি সরকার জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়াই ছিল রায়ের সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য। সাবেক এই উপদেষ্টার মতে, ‘প্রধান বিচারপতির এই দুরভিসন্ধি প্রকাশ হয় তখন, যখন তিনি অন্য মামলায়,পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উদাহরণ দেন।
অধ্যাপক মোদাচ্ছের বলেন, ‘শেখ হাসিনা যে একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, তা আরেকবার প্রমাণ করলেন। তিনি রায়ের আসল উদ্দেশ্য জনগণের সামনে উন্মোচন করে দিলেন এবং জনগণের আদালতে এর বিচার চাইলেন।’ তাঁর মতে, ‘এই দেশের মালিক হলো জনগণ। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের মালিক হলো জনগণ।’
ওয়ান ইলেভেনের সঙ্গে কেন এই রায়কে কেন তুলনা করছেন?, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের মূল লক্ষ্য ছিল বিরাজনীতিকরণ। রাজনীতিবিদরা খারাপ এমন একটা নোংরা, কুৎসিত প্রচারণা চালিয়ে একটি সুশীল গোষ্ঠীর ক্ষমতা জবর দখল। এই রায়টি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করুন, দেখবেন এখানেও রাজনীতিকে এবং রাজনীতিবিদদের কুলষিত করার অপচেষ্টা। এই রায় নিয়ে এখন যদি কেউ হাইকোর্টে যেয়ে বলে, সংসদ অকার্যকর কাজেই এটা বাতিল করে দেওয়া হোক। তখন হাইকোর্ট এটা করতে বাধ্য। এই রায়ের মাধ্যমে আবার ওয়ান ইলেভেনের মতো একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।’ অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী মনে করেন, ‘শেখ হাসিনা এই রায়ের ব্যাপারে স্পষ্ট কথা বলায়, এখন ষড়যন্ত্রকারীরা লেজ গুটাবে। না হলে, এই রায় দেশকে এক ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেত।’ তিনি ড. কামাল হোসেন সহ এমিক্যাস কিউরিদের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘এরাই ছিল ওয়ান ইলেভেনের কুশীলব। এরাই এই রায়ের প্রণেতা।’
No comments:
Post a Comment